ফিরে দেখা

ছন্দ: জানা নেই

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত ৬টি মন্তব্য এসেছে।

• শান্তনু দে ১৮/০২/২০২০, ১৮:১৮ মি:

  আমি মনে করি না গীতিকবিতাকে আপাতবোধ্য কোনো ছন্দের বেড়ি পরানর প্রয়োজন আছে - গজ়লে তা একেবারেই অপ্রয়োজনীয় একটি বিষয়। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে বোধহয়। জগজিৎজির বিখ্যাত একটি গজলের প্রথম শেরটি এরূপ- "আজ ফির উনকা সামনা হো...কেয়া পতা উসকে বাদ কেয়া হোগা...। সবা সীকড়ির বিখ্যাত চারটি শের নিয়ে বিখ্যাত এই গজ়লটি তৈরী হয়েছে। কোথায় খুঁজবেন অন্ত্যমিল এখানে। তবে কাঁচি হাতে থাকলে কাটার কাপড় তো জোগাতেই হবে। গানের শেষ বিচার শ্রোতার কানে আর হৃদয়ের গহীনে- কবিতার আড়ম্বড়ে নয়। পাঠক শ্রোতাদের সম্মান জানাই।

  উত্তর দিন
• পল্লব আশফাক ০৫/০৭/২০১৮, ১৬:১২ মি:

  আমি জনাব তপন বাগচীর সাথে সহমত পোষণ করছি।

  
  

  সাধারণত: শেষের লাইনে হুবহু একই শব্দ দিয়ে অন্ত্যমিল দিলে তার আগের কোনো শব্দেও অন্ত্যমিল থাকে। যেমন 'বুঝতে হবে'র সাথে 'খুঁজতে হবে' দিয়ে মিল দেয়া যেতে পারে। দুই লাইনেরই শেষের শব্দ 'হবে' হলেও আগের শব্দ 'বুঝতে' ও 'খুঁজতে'-এর মিল এখানে বিবেচ্য হচ্ছে।

  
  

  আপনি জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের যে গানের কথা এখানে উল্লেখ করেছেন, সেখানেও তাই হয়েছে। প্রতিবার 'কেউ বোঝে না' বলার আগে মিল দেয়া হয়েছে। গানটি নিচে দিলাম :

  
  

  কি কখন বলে বাঁশি
  রাধা না হলে কেউ বোঝে না ।
  আঁধারে কি ধন আছে,
  চোখ না জ্বেলে কেউ বোঝে না ।।

  
  

  চেনা পথ কেন তবু
  পথ যে ভোলে, কেউ বোঝে না,
  ঠিকানা ঠিকই থাকে,
  মনই টলে কেউ বোঝে না ।।

  
  

  নিশীথে কখন সে কোন
  সূর্য জ্বলে, কেউ বোঝে না ।
  চোখে চোখ রেখে দু'জন
  সময় গেলেও কেউ বোঝে না ।

  
  

  কি সুখে থেকে লোকে
  দুঃখ ভোলে, কেউ বোঝে না ।
  দু'চোখে সাগর আছে
  জল না ঢেলে কেউ বোঝে না ।।

  
  

  আস্থায়ীতে দেখুন, 'কেউ বোঝে না'-র আগে 'না হলে', 'না জ্বেলে' আছে। তবে এখানেও তপন-দার সঙ্গে একমত হতে হবে। ভুলের রেফারেন্সে ভুলের বোঝাই বেড়ে চলে। কারণ 'হলে'র সাথে 'জ্বেলে', 'ভোলে'র সাথে 'টলে' বা 'ঢেলে', এগুলোর কোনোটাই সঠিক অন্ত্যমিল নয়। জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় অতি শ্রদ্ধাভাজন ও গুণী গীতিকবি হলেও এখানে অন্ত্যমিল সঠিক হয়নি। এটা মেনেই তাকে আমাদের সম্মান দিতে হবে।

  উত্তর দিন
• তপন বাগচী ০৪/০৭/২০১৮, ১০:৫৯ মি:

  এক ‘হবে’ শব্দ দিয়ে ৫বার অন্ত্যমিল দেয়ার এই চেষ্টা কবিতার দুর্বলতা মনে হচ্ছে। একে গানে রূপান্তর করার ক্ষেত্রে উৎপল ভট্টাচার্যের কৃতিত্বে প্রশংসা করি। কিন্তু শান্তনু দে-র কবিতার ঘাটতিটুকুর কথাও মনে রয়ে যায়। অভিনন্দন দুজনকেই।

  উত্তর দিন
  • শান্তনু দে ০৪/০৭/২০১৮, ২১:০৫ মি:

    ধন্যবাদ আপনাকে......গজল আঙ্গিকের গানগুলির বাণী/শায়েরী একটু খেয়াল ক'রে শুনে/পড়ে দেখলেই আপনার বোঝার এ ভ্রান্তি দূর হবে- এ আশা রাখি। গজলের শায়েরীতে একই শব্দ ব্যবহার করে অন্ত্যমিল দেওয়াটাই প্রচলিত রীতি এবং সেটা এ ধরণের গানের অন্যতম শক্তি। বাংলাভাষায় রচিত গীতিকবিতায় এ জাতীয় নিরীক্ষণ বিরল হলেও দুর্লভ নয়।এ প্রসঙ্গে শ্রদ্ধেয় গীতস্রষ্টা ও শিল্পী জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের 'কী কখন বলে বাঁশি......' গানটির কবিতাটি খেয়াল করতে অনুরোধ করি যেখানে '.....বোঝে না' কথাটি বারবার অন্ত্যমিল ঘটাচ্ছে ও গানটিকে রস-সমৃদ্ধ করে তুলছে। কবিতার কতক ঘাটতি সুরের মাধ্যমে ঢেকে দেওয়া হয়ত যায় - কিন্তু উন্নতমানের সুরকার তথা শিল্পীরা দুর্বল কবিতার ঘাটতি পূরণের দায়িত্ব সচরাচর গ্রহণ করেন না । মাপ করবেন...আপনার সমালোচনা এ অধমের আগামীর সম্পদ।

    উত্তর দিন
    • শান্তনু দে ০৫/০৭/২০১৮, ০৩:৪৮ মি:

      মন্তব্য বিষয়ভিত্তিক এবং প্রত্যুত্তর ব্যাখ্যাভিত্তিক না হোলে মূল আলোচনাটি বাধাপ্রাপ্ত হয়। ভুল-ঠিক এর দ্বন্দ্ব ব্যাকরণের পরিসরেই সীমায়িত। সঙ্গীতের স্থান তার অনেক উপরে। যা জানি না...তা জেনে নেবার, যা বুঝি না...তা বুঝে নেবার প্রয়োজনীয় উদারতা অন্তঃকরণে রেখেই পথ চলেছি। বাকিটা শ্রোতাদের দর্শন ও বিচারাধীন..তবে আমার দেওয় রেফারেন্সের ভুলটি ঠিক কী ধরণের, তা জেনে নেবার আগ্রহ রইল..ধন্যবাদ আপনাকে।
    • তপন বাগচী ০৫/০৭/২০১৮, ০১:৩২ মি:

      সুরে বাণীর দুর্বলতা ঢেকে দেয় বটে! আর ভুলের রেফারেন্সে ভুলের বোঝাই বেড়ে চলে। ধন্যবাদ আমাকে ভুল না বোঝার উদারতার জন্য।