প্রথমেই নিজের গভীর অজ্ঞানতাকে স্বীকার করে নিয়ে তারপর আলোচনা শুরু করছি।
আমি মনে করি আমরা এভাবে আলোচনা করলে বিজ্ঞ জনেরা এগিয়ে আসবেন।


যাই হোক আমার আলোচনার মূল বিষয় হল
"গানের কথা ও ভাবের অবিচ্ছিন্নতা" আমরা প্রায়ই  ছন্দ/অন্ত্যমিল ঠিক রাখতে গিয়ে ভাব বিচ্ছিন্ন করে সাধারণ ভুলটি করে বসি । আমি আমাদের প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় স্যার ডঃ সুজিত কুমার বিশ্বাসের (তার প্রতি অগাধ ভক্তি রেখে ) একটি গানের কবিতার পঙক্তি থেকে উদাহরণ দেই ,
০৩/১০/২০১৭ ইং তারিখের
"মনে মনে তাই বুঝি" নামক গানের কবিতা হতেঃ


দূর হতে আমি তারে
আবার দেখেছি;
মনে মনে তাই বুঝি
ভালোবেসে গেছি।


পরনে পলাশ শাড়ি
কত তার রূপ;
তুমি প্রিয় সযতনে
আমি নিশ্চুপ।


উক্ত পঙক্তি দুটির প্রথম পঙক্তি
"দূর হতে আমি তারে
আবার দেখেছি
মনে মনে তাই বুঝি
ভালোবেসে গেছি"


এই টুকু পড়ে পাঠকের মনে এটিই আসে যে দূর হতে একবার দেখার পরে দ্বিতীয়বার আবার দেখায় ভালোবাসার জন্ম হয়েছে।
কিন্তু কবি কি তাই বোঝাতে চেয়েছেন?
বরং আমার মনে হয় নিচের মত করে
এটি বোঝাতে চেয়েছেন।


"দূর হতে আমি তারে
(বারবার)কত যে দেখেছি;
মনে মনে তাই বুঝি
ভালোবেসে গেছি।"


অথবা,


"দূর হতে আমি তারে
কত যে দেখেছি
আর)মনে মনে শুধু তারে
ভালোবেসে গেছি"  


এবার আসি নিচের পঙক্তিতে


"পরনে পলাশ শাড়ি
কত তার রূপ;
তুমি প্রিয় সযতনে
আমি নিশ্চুপ।"


উক্ত পঙক্তি পড়ে পাঠকের অস্পষ্টতা /খটকা লাগবে যে
"তুমি প্রিয় সযতনে" দিয়ে কবি কি বোঝাতে
চেয়েছেন, সযতনে প্রিয় শাড়ি পড়েছে নাকি সে রূপ দেখে সযতনে কবি নিশ্চুপ হয়ে আছেন? এখানে ভাব বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আমার মনে হয় কবি বোঝাতে চেয়েছেন এমনঃ


"পলাশ শাড়ী পরেছে
সযতনে খুব
প্রিয়ার সে রূপ দেখে
আমি নিশ্চুপ। "


আমার মনে হয় গানে এমন ভাবের অবিচ্ছিন্নতা/অস্পষ্টতা থাকা/রাখা কারোরই উচিত হবেনা বা কারো কাছে হয়ত গ্রহনযোগ্যতাও পাবেনা।
আবার স্যারের ঐ গানেরই অন্য চরনে খুব সুন্দর ভাবেই ভাবের অবিচ্ছিন্নতা বজায় রেখেছেন।


"পলকে ক্ষণিক দেখা
স্মৃতি  চিরদিন;
তার রূপ লিখে রাখি
মনে অমলিন।"


উপরের সুন্দর চরনটি যে কেউ পড়েই তার ভাব উদ্ধারে সক্ষম হবে । সবাইকে পৃতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে আজ এখানেই শেষ করছি
আর স্যার ডঃ সুজিত কুমার বিশ্বাসের কাছে অনুরোধ রইল ছন্দের আলোচনার আরো লেখা প্রকাশ করতে।