আমি) দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা
কারোর দানে পাওয়া নয়।
আমি) দাম দিছি প্রাণ লক্ষ-কোটি
জানা আছে জগতময়।।
সতেরো'শ সাতান্ন সনে
ভাইবা দেখেন পড়বে  মনে
দাম দিছি পলাশীর মাঠে
ইতিহাস তার সাক্ষী রয়।।


সেইবারে জানিলো বিশ্ব
আমরা কতো ধনী রে
দান করিতে লক্ষ জীবন
তুচ্ছ বলে গনি রে।
আঠারো'শ সাতান্ন সালে
দাম দিছি ফের জানে-মালে,
পিছন ফিরে চাইলে পরে
একশ বছর কথা কয়।।


ব্রিটিশ গেলো, সইপা গেলো
জল্লাদেরই হাতে রে,
তারা মোদের খুন কইরাছে
নানান অজুহাতে রে।
লক্ষ তরুণ হাসি হাসি
খাইছে গুলি পড়ছে ফাঁসি
তবু না দুঃখিনী বাংলা
তোমার-আমার কারো হয়।।


বাহান্নতে মুখের ভাষা
কিনছি বুকের খুনে রে,
বরকতেরা রক্ত দিছে
বিশ্ব অবাক শুনে রে।
দিছি রক্ত জন্মাবধি
সাগর সাগর নদী নদী
রক্তে বাংলা লাল কইরাছি
এ-কথা তো মিথ্যা নয়।।


দাম দিয়াছি একাত্তরে
পঁচিশে মার্চ রাতে রে
সর্বহারা করছে আমায়
পশ্চিমা ডাকাতে রে!
বাপের সামনে বলুক তো ঝুট
মেয়ের ইজ্জত হয়নি কি লুট?
আজো বাংলার আকাশ বাতাস
তারই শোকে উদাস হয়।।


দাম দিয়াছি মায়ের অশ্রু
বোনেরই সম্ভ্রম রে,
বলতে কি কেউ পারো তোমরা
সে দাম কারো কম রে!
কতো কুলের কুলাঙ্গনা
নাম নিয়াছে বীরাঙ্গনা,
দুঃখে বাংলার পদ্মা-মেঘনা
যমুনা যে উজান বয়।।


দাম দিয়াছে বুদ্ধিজীবী
নামী দামী লোক কতো
এই জন্মে কি ফুরাবে ভাই
আমার বুকের সেই ক্ষত?
উনিশ'শ একাত্তর সালে
ষোলই ডিসেম্বর সকালে
অবশেষে দুঃখিনী এই
বাংলা মা যে আমার হয়।।